ঈদুল আযহা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ঈদুল আযহা মূলত আরবি বাক্যাংশ । এর অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব। এই উৎসবের মূল প্রতিপক্ষ বিষয় হল ত্যাগ করা। এর দিনটিতে মুসলমানেরা ফরজের নামাজের পর ঈদকে দুই রাকাত ঈদুল আযহা নামাজ আদায় করে ও অব্যবহিত পরে স্ব-স্ব আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী ছাগল গরু ভেড়া মহিশ উট আল্লাহর নামে কোরবানি করে। আমি চান পত্রিকায় ঈদুল আযহা জিলহজ এর ১০ তারিখে পড়ে আন্তর্জাতিক  পত্রিকায় তারিখ প্রতিবছর ভিন্ন হয়, সাধারণত এক বছর থেকে আরেক বছর দশ বা এগারো দিন করে কমতে থাকে। ঈদের তারিখ স্থানীয়ভাবে জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে।



সূচিপত্র 

  • ইতিহাস
  • ঈদের নামাজ
  • পশু কোরবানি
  • মাংস বিতরণ
  • গুরুত্ব
  • তাৎপর্য
  • উদযাপন
  • শেষ কথা


ইতিহাস

ইসলামের বিভিন্ন বর্ণা অনুযায়ী মহান আল্লাহ তায়ালা ইসলামের রাসূল হযরত ইব্রাহিমকে স্বপ্নযোগে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানী করার নির্দেশ দেন, " তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কুরবানী করো "
ইভেন স্বপ্নে এরূপ আদেশ পেয়ে দশটি উট কুরবানী করলেন। পুনরায় তিনি আবারও একই স্বপ্ন দেখলেন। অতঃপর ইব্রাহিম এবার ১০০ টি উট কোরবানি করেন। এরপরও তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন আমার কাছে তো এ মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল ছাড়া আর কোন প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি সহ আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এ সময় শয়তান আল্লাহর আদেশ পালন করা থেকে বিরত করার জন্য ইব্রাহিম ও তার পরিবারকে প্রলুদ্ধ করেছিল, এবং ইব্রাহিম শয়তানকে পাথর ছুড়ে মেরেছিল। শয়তানকে তার প্রত্যাখ্যানের কথা স্মরণে হজের সময় শয়তানের অবস্থানের চিহ্ন স্বরূপ নির্মিত তিনটি স্তম্ভে প্রতি কি পাথর নিক্ষেপ করা হয়।  


যখন ইব্রাহিম আরাফাতের পর্বতের ওপর তার পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার জন্য কল দেশে ছুরি চালানো চালানোর চেষ্টা করলেন তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে তার পুত্রের পরিবর্তে একটি প্রাণী কুরবানী হয়েছে এবং তার পুত্রের কোনো ক্ষতি হয়নি। ইব্রাহিম আল্লাহর আদেশ পালন করার দ্বারা কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এটি ছিল ছয় সংখ্যক পরীক্ষা। এতে সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ ইব্রাহিমকে তার খলিল ও বন্ধুত্ব হিসেবে গ্রহণ করেন কোরআনে ইব্রাহিম আল ইসলামের পুত্রের কোরবানির ঘটনা উল্লেখিত হয়েছে।

এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলমানরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতিবছর এই দিবসে উদযাপন করে জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিন ধরে ঈদুল আযহার কুরবানী চলে। হিজরী চন্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার মাঝে দুই  মাস দশ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সর্বোচ্চ 70 দিন হতে পারে।

ঈদের নামাজ

মুসলিমগণ ঈদুল আযহা নামাজ মসজিদে বা খোলা মাঠে আদায় করে থাকে। ঈদের নামাজ জিলহজের দশ তারিখে সূর্য উদয়ের পর থেকে জোহর নামাজের সময় হবার আগ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে যেকোনো সময় আদায় করা হয়ে থাকে। কোন কারণবশতাকৃতিক দুর্যোগ নামাজ আদায় করা না গেলে ঈদুল আযহা নামাজ পর্যন্ত ওই সময়ের মধ্যে আদায় করা যাবে। ঈদের নামাজের আগে মুসল্লিরা জোরে জোরে তাকবীর উচ্চারণ করে
" আল্লাহু আকবার আল্লাহু আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।"
ঈদের নামাজ দুই রাকাত। এটি ওয়াজিব নামাজ। তার জামাতের সঙ্গে ছয় অতিরিক্ত তদবিরের সঙ্গে পড়তে হয়। ঈদের নামাজ শেষে ইমামের জন্য খুতবা পড়া সুন্নত ও মুসল্লিদের জন্য খুতবা সোনা ওয়াজিব। নামাজ শেষ করে মুসল্লিরা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে সম্পর্কটা বজায়  রাখে।

পশু কুরবানী

ইসলাম মতে ঈদুল আযহার দিনে যার যাকাত দেওয়ার সামর্থ্য আছে অর্থাৎ যার কাছে ঈদের দিনে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলার পরিমাণ সম্পদ ,যেমন জমানো টাকা আছে তার ওপর ঈদুল আযহার উপলক্ষে পশু কুরবানী করা ওয়াজিব। ঈদুল আযহার দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী দুইদিন পর পশু কুরবানী করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে হয়েছে। মুসাফির বা ভ্রমণকারীর ওপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয় ।ঈদুল আযহার নামাজ শেষে কুরবানী করতে হয়। ঈদুল আযহার নামাজের আগে কুরবানী করা সঠিক নয়। বাংলাদেশেরনা  মুসলিমরা সাধারণত গরু ও ছাগল কুরবানী দিয়ে থাকে। এছাড়া কেউ কেউ ভেড়া মহিষ উড দুম্বা কুরবানী দিয়ে থাকেন ২০১৯ সালে বাংলাদেশ কোরবানি পশুর চাহিদা ছিল ১ কোটি ১০ লক্ষ আর বাংলাদেশের কোরবানি উপযোগী পশুর সংখ্যা ছিল এক কোটি 18 লক্ষ সংখ্যা ছিল এক কোটি পাঁচ লাখ এক ব্যক্তি শরিক হতে পারে। ছাগলের বয়স কম থাকে এক বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স কমপক্ষে দুই বছর হতে হবে। নিজ হাতে কুরবানী করা ভালো ।কোরবানির প্রাণীর দক্ষিণ দিকে রেখে কিবলামুখী করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করতে হয়।    

মাংস বিতরণ

সাধারণত আমাদের দেশে কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে এক ভাগ গরি ব দুস্থদের মধ্যে একভাগ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে এবং একভাগ নিজের খাওয়ার জন্য রাখা হয়। তবে মাংস বিতরণের কোন সুস্পষ্ট হুকুম নেই কারণ কোরবানির হুকুম পশুর জবেহ করা দ্বারা পালন করা হয়। কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি অর্থ দান করে  দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ তৈলাক্ত ত্বকে কোন সাবান ব্যবহার করা উচিত

ঈদে আমরা আত্মীয়-স্বজন গরিব, মিসকিন, এতিম ও অসহায় মানুষকে শারীরিকভাবে সহায়তা সহায়তা করব। কল্যাণে আমাদের কাজ করতে হবে। আসুন আমরা কোরবানি ঐতিহাসিক এই ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমিও আমাদের পরিবারকে এক আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করা মানসিকতা তৈরি করি। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু বলেছেন, আল্লাহ তাদের স্বাস্থ্য চেহারা এবং ধন সম্পদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না।বরং তিনি দৃষ্টি দেন তোমাদের অন্তর এবং আমলের প্রতি। সুতরাং কুরবানীর পূর্বে কুরবানী দাতার নিয়ত এবং সংকল্প শুদ্ধ করে নিতে হবে।

গুরুত্ব

ঈদুল আযহার গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন হাদীসে এ ব্যাপারে যথেষ্ট তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহতালা বলেন কুরবানী পশু সমূহকে আমরা তোমাদের জন্য আল্লাহর নির্দেশন সমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছি। এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। [সূরা হাজ্জ আয়াত ৩৬]] মহান আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন আর আমরা তার ইসমাইলের পরিবর্তে জবহ করার জন্য দিলাম একটি মহান কুরবানী। আমরা এটিকে পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিলাম। আল্লাহ বলেন তুমি তোমার প্রতিপালকের জন্য সালাত আদায় কর এবং কুরবানী করো। কাফির ও মুশরিকদের দেব-দেবী ও বিভিন্ন কবর ও ভেদির পূজা দেই এবং মূর্তির উদ্দেশ্যে কুরবানী করে থাকে। তার প্রতিবাদ স্বরূপ মুসলমানদের আল্লাহর জন্য সালাত আদায়ের ও তার উদ্দেশ্যে কুরবানী করার হুকুম দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে সমর্থ থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি সুন্নাতে ইব্রাহিম হিসাবে কুরবানী করল না সে যেন ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয় বা না যাই। মহান আল্লাহতালার নির্দেশন যা সুন্নতি ইব্রাহিম হিসেবে রাসুলেস সালামের মদিনার প্রতিবছর আদায় করা হয়েছে এবং সাহাবীগণ নিয়মিত কোরবানি করছেন অতঃপর কোভিদ ও ধারায় মুসলিম উম্মতেরা সমর্থ্যবানদের মধ্যে এটি চালু আছে কোরআন সুন্নাহর দ্বারা এটা প্রমাণিত।

তাৎপর্য

ঈদুল আযহা ইব্রাহিম (আঃ), বিবি হাজরা ও ইসমাইলের পরম ত্যাগের স্মৃতি বিজড়িত উৎসব। ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে  আল কুরআনের মুসলিম  জাতির পিতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ পরিবারটি বিশ্ব মুসলিমের জন্য ত্যাগের মহোত্তম আদর্শ তাই ঈদুল আযহার দিন সমগ্র মুসলিম জাতি ইব্রাহিম সুন্নত পালনের মাধ্যমে আলো সন্তুষ্টি অর্জনের প্রাণপণ চেষ্টা করে। কুরবানীর স্মৃতিবাহী জিলহজ মাসের হজ উপলক্ষে সমগ্র পৃথিবী থেকে লাখ লাখ মুসলমান সমাবেশ হয় ইব্রাহিম আলাই সালাম এর স্মৃতি বিজড়িত মক্কা মদিনায়।। তারা ইব্রাহিমে আদর্শে আদর্শবান হওয়ার জন্য জীবনের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করে। হজ মুসলিম উম্মার ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতিত্ববোধের এক অনন্য উদাহরণ। যা প্রতিবছরই আমাদেরকে তাওহীদি প্রেরণায় উজ্জীবিত করে। আমরা নিবিড়ভাবে অনুভব করি বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব। ঈদের উৎসব একটি সামাজিক উৎসব ,সমষ্টিগতভাবে আনন্দের অধিকার কত উৎসব। ঈদুল আযহা উৎসবের একটি অঙ্গ হচ্ছে কুরবানী ।কুরবানী হলো চিত্রশুদ্ধি এবং পবিত্রতার মাধ্যমে । এটি সামাজিক রীতি হলেও আল্লাহর জন্য এর রীতি প্রবর্তিত হয়েছে তিনি একমাত্র বিধাতা। প্রতিমুহূর্তেই যার করুণা লাভের জন্য মানুষ প্রত্যাশী। আমাদের বিত্ত , সংসার এবং সমাজ তার উদ্দেশ্যেই নিবেদিত এবং কুরবানী হচ্ছে সেই নিবন্ধনের একটি প্রতীক । মানুষ কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের ধন্য হতে চাই ।


আল্লাহর জন্য মানুষ তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ত্যাগ করতে রাজি আছে কিনা সেটাই পরীক্ষার বিষয়। কোরবানি আমাদেরকে সেই পরীক্ষার কথায় বারবার স্মরণ করিয়ে দেই। ইব্রাহিম আলাই সালাম এর কাছে আল্লাহুর পরীক্ষা ছিল তাই। আমাদেরকে এখন তার পুত্র কুরবানী দেওয়ার মত কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় না। একটি মুসল্লা হালাল পশু কুরবানী করে আমরা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারি। 
ঈদুল আযহার লক্ষ্য হচ্ছে সকলের সাথে শ্রদ্ধার আন্তরিকতা এবং বিনম্রতার আচরণ করা। মুসলিমদের জীবনে এই সুযোগ সৃষ্টি হয় বছরে মাত্র দুবার। ধনী দৈত্র রাজা-প্রজা একই কাতারে দাঁড়িয়ে পায়ে পা এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দুই রাকাত সালাত আদায়ের মাধ্যমে মানুষের ভেদাভেদ ভুলে যায়। পরস্পর কুশল বিনিময় করে দৈনিক জীবনে যে দৈন্য হতাশা বা তা দূরীকরণের জন্য ঈদুল আযহার সৃষ্টি হয়েছে যারা অসুখী এবং দরিদ্র তাদের জীবনের সুখের প্রলেপ দেওয়া এবং দরিদ্রদের কোষাঘাত দূর করা সামর্থ্যবান মুসলমানদের কর্তব্য।
মানব পুত্রের কোন সৎকর্মই আল্লাহর কাছে কুরবানীর দিনে রক্ত প্রবাহিত করার চাইতে অধিকতর প্রিয় নন কিয়ামতের দিনে কুরবানীর পশুর সিং লোম তার খোরসহ নিয়ে হাজির করা হবে। কুরবানীর রক্ত মাটি স্পর্শ করার পূর্বে আল্লাহর কাছে তার সওয়াব গ্রাহ্য হয়ে যায়। আল্লাহর কাছে কুরবানীর স্বভাব গ্রাহক হওয়ার তাৎপর্য কি যে অকুণ্ঠ ইসলাম তার ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত উদ্দীপ্ত হয়ে ইব্রাহিম আলাই সালাম সক্রিয় প্রমাণ প্রান্তিক পুত্রের স্নয়ে ছুরি উত্তোলিত করেছিলেন কোরবানির পশুর গলায় ছুরি দেওয়ার সময় ইব্রাহিমের মানুষ সন্তানের বিদই সেই ইমান ও ত্যাগের শুরু যদি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের আকুল আগ্রহ যদি উত্তপ্ত না হয় তাহলে তাদের কুরবানীর উৎসব গোশত খুর পূর্বেই পর্যবসিত হবে।


ইব্রাহিম আলাই সালাম সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করেছিলেন, হয়েছিলেন স্বয়ং আল্লাহ ঘোষিত মানব জাতির ইমাম। তিনি মানবজাতির আদর্শ। আল্লাহ বলেন তোমরা যারা আল্লাহ ও পরকালে ভয় করো তাদের জন্য ইব্রাহিম ও তার অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।

উদযাপন

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের জন্য গোসল করে এবং নতুন কাপড় পরিধান করে। সকল মুসলিম ছেলেদের জন্য এই ঈদের দুই রাকাত নামাজ পড়া ওয়াজিব এবং মহিলাদের জন্য এই নামাজ সুন্নত। বাঙালি মুসলমানরা নামাজের পরে পুরো পরিবার একত্রে সকালবেলা মিষ্টি জাতীয় খাদ্য নিয়ে নাস্তা করে। সকালে এই নাস্তা থাকে নানা ধরনের মিষ্টান্ন । অনেক পরিবারে ঈদের দিনে কুরবানীর আগ পর্যন্ত রোজা রাখে কুরবানীর গোশত দিয়ে ইফতার করে। মুসলমান পুরুষেরা আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কুরবানীর প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। কুরবানির শেষে কুরবানীর প্রধান অনুযায়ী কোরবানির মাংস গরিব আত্মীয় প্রতিবেশীর মধ্যে ভাগ করে দেয়। এদিনে প্রত্যেক মুসলমান ওনাদের বাড়িতে বেড়াতে যায় আনন্দ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে  নেই। বাঙালি মুসলিম সমাজে এ উৎসবটি কেবল মুসলমানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, অন্যান্য ধর্মালম্বিরাও এ  উৎসবে অংশগ্রহণ করে।

শেষ কথা

মুসলিম পরিবারের প্রতিটি মানুষেরই একমাত্র আদর্শ হচ্ছে আল্লাহর হুকুমের কাছে মাথা নত না করা। আল্লাহর হুকুম এর কাছে আত্মসমর্পণ করাই হবে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম আলাই সালাম এর শিক্ষা দিয়ে গেছেন তার সন্তানদের। পবিত্র ঈদুল আযহার শিক্ষা হচ্ছে আত্মত্যাগের উজ্জীবিত হওয়া, মানবিক কল্যাণ সাধন করা্‌ সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আরো সুদৃঢ় করা। পিতা যখন পুত্রকে কাত করে শুইয়ে দিলেন তখনই আল্লাহ ইব্রাহিমকে বললেন স্বপ্ন দেশ পালন কর করা হয়ে গিয়েছে কারণ এখানে মূল কথা হলো মনের কোরবানি ঈদুল আঃ মন থেকে আল্লাহর আদেশ মেনে নিয়েছেন। পিতা তার মন থেকে ছেলেরা পরিপূর্ণরূপে কুরবানী করে দিয়ে ছেলেকে জবাই করতে প্রস্তুত হয়েছেন। পুত্র তার মন থেকে পিতা মাতা ও দুনিয়ার সকল মায়া কুরবানী দিয়ে আখেরাতের জন্য প্রস্তুত নিয়ে ছেন। তাদের মনের এ কুরবানী ছিল নিখাদ। আর এই জন্যই শায়িত করার সাথে সাথেই আল্লাহ জানিয়ে দিলেন যে তার কোরবানি কবুল হয়ে গিয়েছে। আর এর বিনিময় আল্লাহ জান্নাতি দুম্বা দিয়ে কুরবানী ব্যবস্থা করলেন।
 তাই কথায় আছে বনের পশুকে নয়, মনের পশুকে কুরবানী দিতে হবে. অর্থাৎ কুরবানীর মানুষের মনে যে কোন  কুবৃত্তি গুলো আছে সে পশুত্ব আছে ,সেগুলোকে কুরবানীই দিতে হবে. মনের ভেতর থেকে সকল  পশু থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url